সন্তান প্রসবের সময় নবজাতকসহ মায়ের মৃত্যু, অভিযোগ প্রত্যাহার

মুক্ত বাংলাদেশ
রবিবার, ১ জুন, ২০২৫ | জুন ০১, ২০২৫ Last Updated 2025-06-01T14:09:19Z


সন্তান প্রসবের সময় জান্নাত (২৩) নামে নবজাতকসহ এক প্রসুতির মৃত্যু হয়েছে। রবিবার (১ জুন) সোনারগাঁও উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের ষোলপাড়া গ্রামের আবু তালেবের বাড়িতে মর্মান্তিক এ ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় নিহত জান্নতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ করে। পরে পুলিশ তদন্তে গেলে দীর্ঘ আলোচনা (রফাদফা)’র পর অভিযোগ প্রত্যাহার করা হয়। এ ঘটনায় স্থানীয় এলাকায় পুলিশের ভুমিকা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। 


বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানায়, নিহত জান্নাতের বোনের স্বামী থানায় লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, কুমিল্লার মুরাদপুর উপজেলার আকবর আলীর মেয়ে হৃদয়ের সাথে ময়মনসিংহের বাসিন্দা হৃদয় মিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে জান্নাত তার শশুর-শাশুড়ির সাথে সোনারগাঁও উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের ষোলপাড়া গ্রামের আবু তালেবের বাড়িতে ভাড়ায় বসবাস করতেন। 


বিয়ের পর থেকে জান্নাতের পরিবারের কাছে যৌতুকের টাকা চাওয়া নিয়ে জান্নাতকে বিভিন্ন সময় নির্যাতন করতো হৃদয়ের পরিবারের লোকজন। এমন কি বিয়ের পর হৃদয়ের বিদেশ যাওয়ার সময় জান্নাতের পরিবারের কাছে আর্থিক সহায়তা চেয়ে না পাওয়ায় জান্নাতকে নির্যাতন করায় তার পরিবারের সাথে দ্ব›দ্বও হয়। সে সুবাদে জান্নাত গর্ভবতী হওয়ার পর তাকে পর্যাপ্ত খাবার না দেওয়াসহ বিভিন্ন দিক দিয়ে নির্যাতন করতো। 


এমনকি ছেলে পক্ষের টাকা বাঁচাতে জান্নাতের অবস্থা বেগতিক হওয়ার পরও বাড়িতে ধাত্রী নিয়ে স্বাভাবিক গর্ভপাতের চেষ্টা করে হৃদয়ের পরিবারের সদস্যরা। গর্ভপাতের সময় জান্নাতের নবজাতকে টেনে বের করার সময় হাত ও গলার একটি বিশেষ অংশ ছিড়ে রক্তক্ষরণে নবজাতকের মৃত্যু হয় এবং পরক্ষণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে প্রসুতি জান্নাতও মৃত্যুর কোলে ঢেলে পড়ে।


অভিযোগে এ কথাও উল্লেখ করা হয়, জান্নাত তার শারীরিক পরিস্থিতির কথা বুঝতে পেরে শশুড় ও শাশুড়িকে অনুনয়-বিনয় করে জান্নাতকে হাসপাতাল নিতে বললেও নেয়নি। তবে, জান্নাতের মৃত্যুর পর তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। জান্নাতের শশুর বাড়ির সদস্যদের অবহেলার কারণেই জান্নাতের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।


এদিকে, থানায় লিখিত এমন অভিযোগে সোনারগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) পঙ্কজ দুপুরে ঘটনাস্থলে যান। বিকাল ৫টা পর্যন্ত তিনি ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার না করে সমাধানের জন্য অজ্ঞাত কারণে উভয় পক্ষের সাথে ঘটনাটি সমাধানের জন্য বসেন। দীর্ঘ আলাপ শেষে বিকাল প্রায় ৫টার দিকে লাশ উদ্ধার না করে থানায় ফিরে যান। 


এ ব্যাপারে ঘটনাস্থলে যাওয়া পঙ্কজের সাথে মোবাইলে জানতে চাইলে ‘তিনি কাউকে তথ্য দিতে বাধ্য নন বলে জানান’। বিষয়টি থানার বড় বাবু (ওসি) দেখছেন বলেও জানান। 


নিহতের পক্ষ থেকে অভিযোগের কথা স্বীকার করে সোনারগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মফিজুল ইসলাম বলেন, গর্ভপাতের সময়ই তাদের মেয়ের মৃত্যু হয়েছে মেয়ে পক্ষ বুঝতে পেরে পুণরায় অভিযোগ তুলে নেয়।

Comments
মন্তব্য করার ক্ষেত্রে অনুগ্রহ পূর্বক অশ্লীল শব্দ প্রয়োগ, গালিগালাজ, ব্যাক্তিগত আক্রমণ, নাম বিকৃত করা থেকে বিরত থাকুন।
  • সন্তান প্রসবের সময় নবজাতকসহ মায়ের মৃত্যু, অভিযোগ প্রত্যাহার

জনপ্রিয়